স্টাফ রিপোর্টার, কেশবপুর (যশোর) : বিয়ে ছাড়াই কপালে সিঁদুর, হাতে শাঁখা পরিয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগে শনিবার শিশুটিসহ পলাশ ব্যানার্জি (২৮) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
টাকার বিনিময়ে মেয়েকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে তার বাবাকেও আটক করেছে পুলিশ।
কেশবপুর থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা তপন ব্যানার্জি তার শিশুকন্যাকে বিয়ে ছাড়াই মাত্র ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার রাত দশটার দিকে পাশের মণিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের জনৈক অরবিন্দুর বখাটে ছেলে পলাশের হাতে তুলে দেন। পলাশ ওই রাতে শিশুটিকে তার নিজ বাড়িতে নেওয়ার পথে শুধু সমাজ রক্ষার জন্য কেশবপুরের কলাগাছি বাজার থেকে সিঁদুর-শাঁখা কিনে তার কথিত স্ত্রীর হাতে ও কপালে পরিয়ে নেয়। এরপর ওই রাতে তাকে বাড়ি নিয়ে কয়েক দফা ধর্ষণ করে। রাতে শিশুটির ওপর পাশবিক নির্যাতন চলাকালে সে চিৎকার করে। এসময় পলাশ ব্যানার্জির প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে ছুটে আসেন। একপর্যায়ে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে পড়লে গ্রামবাসীর রোষানলে পড়ে পলাশ। এরমধ্যে গ্রামবাসীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আজ শনিবার বিকেলে সে স্কুলছাত্রীকে নিয়ে ভারতে পালাচ্ছিল। পথে পুলিশ কেশবপুরের মূলগ্রাম বাজার থেকে তাদের আটক করে। এরপর স্কুলছাত্রীর বাবাকেও নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
উদ্ধার পাওয়া শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে জানায়, তার বাবা বিয়ের কথা বলে তাকে পলাশের হাতে তুলে দেন। এরপর পলাশ তাকে বিয়ে না করেই বাজার থেকে তার কপালে সিঁদুর ও হাতে শাঁখা পরিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।
তপন ব্যানার্জির স্ত্রী সুমিত্রা ব্যানার্জি বলেন, তাদের মেয়ে বয়স কম হওয়ায় তাকে ঠাকুর দিয়ে বিয়ে না পড়িয়ে শুধু শাঁখা-সিঁদুর পরিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখবর পেয়ে পুলিশ মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেওয়ার অপরাধে তার স্বামীকে আটক করেছে।
কেশবপুর থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ তহিদুজ্জামান বলেন, শিশুটির বয়স ১১ বছর হবে এবং ছেলেটির বয়স ২৮ বছর। ঘটনাটি এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহানকে জানান। এরপর তার নির্দেশে এসআই ওয়াসিম আকরাম শনিবার সন্ধ্যায় ফোর্স নিয়ে মূলগ্রাম বাজার থেকে ছেলে-মেয়েসহ মেয়েটির বাবাকে আটক করেন। পরে নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।