নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইল পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী নড়াইল আনজুমান আরাকে বিজয়ী করতে দলীয় নেতাকর্মীরা এখন একাট্টা। দলীয় নেতাকর্মীরা দল দলে বিভিন্ন হয়ে প্রতিদিন উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ভিন্ন চিত্র বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর শিবিরে। তাদের দাবি তারা কৌশলগত প্রচারণা চালাচ্ছেন।
গত সোমবার (২৫ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী সরদার আলমগীর হোসেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে থেকে নৌকা প্রতীককে সমর্থন দেওয়ায় নৌকার পালে খুব ভালোভাবেই হাওয়া লেগেছে। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থীর প্রচারণা চলছে কৌশলগত কায়দায়। দলের শীষ নেতারা প্রকাশ্যে ভোট না চাইলেও নানা পন্থায় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে নড়াইল পৌরসভা গঠিত হয়। ২২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভাটি বর্তমানে প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত নড়াইল পৌরসভায় ২০১১ সাল ছাড়া সমস্ত পৌর নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। ২০১১ সালে পৌর নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করেন।
এবারের পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনজুমান আরার বিপরীতে লড়ছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক মেয়র জুলফিকার আলী এবং ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা খায়রুজ্জামান।
সাধারণ ভোটারদের ধারণা নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা নৌকা এবং ধানের শীষ প্রতীকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তারা আরো জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা বেশ জোরেশোরে চলছে। অন্যরা সেদিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনজুমান আরা তার নির্বাচনী ওয়াদায় বলেছেন, তিনি মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত পৌরসভা গড়বেন। একইসাথে পৌর এলাকার রাস্তা প্রশস্ত, যানজটমুক্ত শহর, বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, সুপেয় পানি, সহনীয় মাত্রায় পৌর ট্যাক্সসহ একটি মাস্টার প্লান অনুযায়ী মডেল পৌরসভা গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে বিএনপি প্রার্থী জুলফিকার আলী নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে আশাবাদ মন্তব্য করে বলেন, তিনি পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলে আগামী ২৫ বছরের পরিকল্পনা করে যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ করবেন।
প্রচারণার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা আমাদের নিজস্ব কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। কারণ গতকালও (২৬ জানুয়ারি) আমাদের একমাত্র নির্বাচনী প্রচার কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে। তাছাড়া নির্বাচনের আগের রাতে ভোট কারচুপির আশংকা রয়েছে। এছাড়া নির্বাচনের দিন হামলা ও ভোটদানে বাঁধা দেওয়ার শংকা রয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল পৌরসভায় তিন মেয়র প্রার্থী, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ ও সাধারণ পদে ৩৯ জন নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। আগামী ৩০ জানুয়ারী নড়াইল পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নড়াইল পৌরসভায় এবার মোট ভোট কেন্দ্র ১৪টি এবং ভোটারের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৭১৭।